ঢাকার পাইকারী মার্কেট গুলো কোথায় এবং কোথায় কোন পণ্য পাবেন

 ঢাকার পাইকারী মার্কেট গুলো কোথায় এবং কোথায় কোন পণ্য পাবেন ।

ঢাকার কোথায় কি- ঢাকার অদূরে কিংবা ঢাকার বাইরের জেলা শহরগুলোতে অনেক ব্যবসায়ী আছেন যারা তাদের প্রয়োজনীয় পন্য কেনার জন্য ঢাকামূখী হয়ে থাকেন। কিন্তু কোথায় কোন পন্যের পাইকারী বাজার তা না জানার কারনে প্রথম দিকে হোঁচট খেতে হয়। আর নতুন ব্যবসায়ীদের জন্য তো খুজে পাওয়াটা আরও বেশী কষ্টকর হয়ে থাকে।

চলুন জেনে নিই পাইকারী মার্কেট গুলো কোথায়:

🎯 বঙ্গবাজার:

গেঞ্জি, প্যান্ট, শার্ট সলিড কালার: তৈরি পোশাক (জামা, প্যান্ট, জ্যাকেট, সোয়েটার, গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া ইত্যাদি), পাদুকা সামগ্রী এবং শাড়ি কেনা যায়। এখানে এসব পণ্য খুচরা ও পাইকারি হারে বিক্রয় হয়। বিদেশি ক্রেতা ও তাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের যোগান দেওয়া কাঁচামাল ব্যবহারের পর দেশের পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছে যত কাপড়, সুতা, বোতাম, জিপার ইত্যাদি উদ্বৃত্ত থাকে মূলত সেগুলি দিয়ে তৈরি বলে বঙ্গবাজারের পোশাক দামে সস্তা।

🎯নবাবপুর:

ফেব্রিকস, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, কৃষি যন্ত্রপাতি, শিল্প যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ইত্যাদি। নিমতলী পেট মার্কেট: পশু পাখির বাচ্চা, খাবার পানির পাত্র, খামারের যন্ত্রপাতি ব্রুডার ইত্যাদি। স্টেডিয়াম মার্কেট:নতুন পুরাতন মোবাইল, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স: বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়ামে দেশের নামকরা ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেট অবস্থিত। এখানে প্রায় ৮০০ টি ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান রয়েছে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯.০০ টা থেকে রাত ৮.০০ টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকে।

এই মার্কেটে এয়ার কন্ডিশনার, রেফ্রিজারেটর, কালার টেলিভিশন (লিড, এলসিডি ও সিআরটি), মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, রাইস কুকার, টোস্টার, সিলিং ফ্যান, ওয়াটার ফিল্টার, আয়রন, ষ্টীল ক্যামেরা, মুভি ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, চার্জার, মেমোরী কার্ড, টিভি কার্ড, ডিস এন্টেনা, রিসিভার, ভিসিডি প্লেয়ার, ডিভিডি প্লেয়ার, সিসি টিভি, নিরাপত্তা সরঞ্জাম এবং গ্যাসের চুলা পাওয়া যায়।

🎯 বায়তুল মোকাররম মার্কেট:

এ মার্কেটে বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায় বলে কোন বিশেষায়িত মার্কেট বলার সুযোগ নেই। দোতলায় দেশের প্রসিদ্ধ বিভিন্ন জুয়েলারী দোকান রয়েছে। ক্যামেরা, সিডি, ডিভিডি প্লেয়ার, টিভিসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য পাওয়া যায় এখানে। ব্যাগ, ল্যাগেজ, ঘড়ি, চশমা, ক্রোকারিজ, জামা-কাপড়, জুতা, খেলনা ইত্যাদির দোকানও রয়েছে। নিচতলায় নেমপ্লেট লেখার ব্যবস্থা রয়েছে। এই মার্কেটে ইসলামী ফাউন্ডেশন এর বই বিক্রয় কেন্দ্রসহ কয়েকটি আতর, টুপি, পাঞ্জাবী, বোরকা, জায়নামাজ প্রভৃতির দোকানও রয়েছে। এছাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামী বই, সিডি, ডিভিডি প্রকৃতিও বিক্রি হয়।

🎯 ধোলাইখাল:

সব ধরণের নতুন পুরাতন ইলেক্ট্রনিক্স ও ধাতব যন্ত্রপাতি: ধোলাইখাল নামটিতে খাল শব্দটি থাকলেও এখানে এলে কোন খাল কিংবা জলাশয় খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। পুরনো ঢাকায় নবাবপুর রোডের মোড় থেকে শুরু করে নারিন্দা পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই ধোলাইখালে পুরোনো যন্ত্রাংশের ব্যবসা শুরু হয়। এখানে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় হাজার পাঁচেক খুচরা যন্ত্রাংশের দোকান রয়েছে। মোটর পার্টসের দোকান ছাড়াও এখানে রয়েছে ড্রাম শিট, লেদ মেশিন, পুরনো লোহা লক্কড়ের দোকান।

রিকন্ডিশন্ড এই খুচরা যন্ত্রাংশগুলো তারা আমদানি করে চীন, জাপান, মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর থেকে। এখানে প্রায় সব মডেলের গাড়ির বিশেষ টয়োটা, নিশান, হোন্ডা, মিৎসুবিশি, সুজুকি, মারুতির যন্ত্রাংশ বেশি পাওয়া যায়। বাস এবং ট্রাকের মধ্যে বেড ফোর্ড, ইসুজু, নিশান, হিনো, ভলভো, টাটা, অশোক লেল্যান্ড, টারসেল, আইয়ার, ক্যান্টার প্রভৃতি গাড়ির যন্ত্রাংশ পাওয়া যায়।

যন্ত্রাংশের দাম জেনে রাখুন -আগেই বলা হয়েছে, যন্ত্রাংশের দাম সম্পর্কে ধারণা না থাকলে এ বাজারে ক্রেতাকে পড়তে হতে পারে বিপাকে। সেক্ষেত্রে দাম জেনে রাখা ভালো। যেমন; সেলফ ১৫শ’ থেকে ২ হাজার ৫শ’, ডায়নামো ১৫শ’ থেকে ২ হাজার, ডিস্ট্রিবিউটর ২ হাজার থেকে ৫ হাজার, কার্বোরেটর ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৬ হাজার, ফ্যান মটর ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ’, রেডিয়েটর ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৭ হাজার, গিয়ার বক্স ২ হাজার থেকে ৭ হাজার, ইঞ্জিন ব্লক ১৫শ’, থেকে ৩ হাজার, পিস্টন সেট ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ’ বাল্ব সেট ৫শ’ থেকে ১৫শ’ ক্লাচ প্লেট ৫শ’ থেকে ১ হাজার, প্রেশার প্লেট ১ হাজার ৫শ’ থেকে ২ হাজার, অয়েল পাম্প ১ হাজার ৫শ’ থেকে ২ হাজার, এসি পাম্প ৫শ’ থেকে ৮শ’, প্লাগ ১ হাজার থেকে ৩ হাজার, ইঞ্জিন পুুলি ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’, মবিল চেম্বার ৫শ’ থেকে ১ হাজার।

এখানে ইঞ্জিনও পাওয়া যায় বিভিন্ন মডেলের। যেমন; হানড্রেড ভাইভ এ ৩০ হাজার, ফোর ই ২৭ হাজার, নাইন টি ৫০ হাজার, নাই টি ফাইভ এ ৩০ হাজার, ফাইভ কে লাইটএজ ৬০ হাজার, ক্রাউন এক্স ১ লাখ, কোরোনা ফোর এক্স এ্যান্ড থ্রি এক্স ৩৫ হাজার টাকা।

যেভাবে ধোলাইখালে পৌঁছাবেন -গুলিস্তান থেকে ধোলাইখালে রিকশায় আসতে খরচ হয় ১৫ থেকে ৩০ টাকা এবং বাসে খরচ ৫ টাকা। মতিঝির থেকে ধোলাইখালের অবস্থান দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। মতিঝিল থেকে এখানে বাসে আসা না গেলেও নিকশায় আসা যায় সহজেই। মতিঝিল থেকে ধোলাইখালের রিকশা ভাড়া ১৫-২০ টাকা। সদরঘাট থেকে পায়ে হেঁটে এখানে আসতে সময় লাগে পনের মিনিট ও রিকশায় খরচ হয় ৮ টাকা।

🎯 জিঞ্জিরা:

নতুন পুরাতন ইলেক্ট্রনিক্স ও ধাতব যন্ত্রপাতি।জিঞ্জিরায় তিনটি পৃথক এলাকায় তৈরি করা পণ্যের নামানুসারে তিনটি স্থান আছে। যেখানে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কারখানা। তাওয়াপট্টিতে আছে ছোট-বড় প্রায় ৭০০ হালকা শিল্প-কারখানা আর এখানে মূলত তৈরি হয় গ্রিল কারখানা, তালা, ছাতার জালা, কব্জা, পাওয়ার প্রেস, প্লেঞ্জার, কেলাম, শিট, কয়েল, ওয়াশার, নাট-বোল্ট, স্ক্রু, তারকাঁটা, তোপকাটা, বালতি, অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-পাতিল, কড়াই ইত্যাদি। টিনপট্টিতে তৈরি হয় টিন, শিট, কয়েল। এখানে ১৫-২০টি কারখানা আছে। তবে এর বাইরেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সেকেন্ডারি শিট মজুদ এবং গোপনে ঢেউটিন তৈরির কাজ হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলো করোগেশন মেশিনে দিন-রাত আমদানিকৃত জিপি শিট কেটে ঢেউটিন তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে থাকে।

জিঞ্জিরার বৈশিষ্ট্য হলো এখানে খুব স্বল্পমূল্যের সামগ্রী ব্যবহার করে কারিগরেরা তৈরি করতে পারেন মানসম্পন্ন অনেক পণ্য। এমনকি তাঁদের দাবি মাত্র ২০-৩০ হাজার টাকা মূল্যমানের যন্ত্রে যে প্লেনশিট থেকে যে ঢেউটিন তাঁরা তৈরি করতে পারেন, তার গুণগত মান যথেষ্ট ভালো। তবে এর সত্যতা নিশ্চিত করার মতো কোনো প্রামাণিক দলিল পাওয়া যায়নি।

লোহার সামগ্রী তৈরিতে জিঞ্জিরার বিশেষ সুনাম রয়েছে।জিঞ্জিরা বাজারে প্রায় দুশো’রও অধিক বিভিন্ন লোহার সামগ্রী তৈরির কারখানা রয়েছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ হার্ডওয়্যার শিল্পের বিশাল যোগান দেয় বলে অভিমত রয়েছে। জিঞ্জিরার কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন সামগ্রীর মধ্যে ঢেউটিন, স্ক্রু, নাট-বল্টু, ক্লাম, তারকাটা, জিআই তার, আলতালা, হ্যাসবোল্ট, কব্জা, দা-বটি, শাবল, বালতি, চাপাতি, কুড়াল, কোদাল, কুন্নি, বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ডেকোরেটর সামগ্রী, ওয়াশিং টব, পিতলের বার্নার(কেরোসিন চুলা), তামা ও পিতলের ডেগ, কলসি, ক্রোকারিজ, তাওয়া, টিফিন ক্যারিয়ার, চাইনিজ সাইলেন্সার/ডাব্বু, আশকল ডুম্বরি, নিক্তিকাঁটা, সাটার, কেচি গেট, লোহার জানালা, দরজা, অ্যালুমিনিয়ামের জগ-মগ ইত্যাদি অন্যতম।

এসব উপকরণ তৈরির কাচামাল আসে ঢাকারই নবাবপুর, নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লা, পুরোন ঢাকা প্রভৃতি এলাকা থেকে। তাওয়াপট্টিতে তৈরিকৃত গ্রিল কারখানা, তালা, ওয়াসার, নাট-বোল্ট ইত্যাদি তৈরিতে নিজেদের তৈরি পাওয়ার প্রেসের মাধ্যমে বানানো হয়। একসময় পাওয়ার প্রেসসহ বড় বড় যন্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি করতে হলেও স্থানীয় কারিগররা উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে সেখানে প্রতিস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছেন সম্পূর্ণ নিজস্ব তৈরিকৃত যন্ত্র। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টি হলো এখানকার সামগ্রীতে স্ক্র্যাপ মেটাল বা পরিত্যক্ত লোহার ব্যবহার, যা সংগৃহীত হয় ভাঙা জাহাজ কিংবা বিভিন্ন কারখানার ভাঙা সরঞ্জাম থেকে।

জিঞ্জিরা লোহার বিভিন্ন সামগ্রী ছাড়াও মেলামাইন, আলকাতরা, নারিকেল তেল, শাড়ি-লুঙ্গি ইত্যাদির জন্য প্রসিদ্ধ। এছাড়া জিঞ্জিরার কালিগঞ্জ দেশীয় গার্মেন্টস সামগ্রী, বিশেষত জিন্স প্যান্ট তৈরিতে সুনাম অর্জন করেছে। দেশীয় বাজারের জিন্সের প্রায় ৮৫ শতাংশ চাহিদা কালিগঞ্জ থেকে পূরণ হয় বলে স্থানীয়দের অভিমত পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি রোহিতপুরের লুঙ্গি, জয়পাড়ার শাড়িও বিশেষ উল্লেখযোগ্য।এছাড়াও এই অঞ্চলে ভারত, জার্মানী,মালয়েশিয়া থেকে আনা কাঁচামালনির্ভর প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে।

🎯 পাটুয়াটুলি বা পূরান ঢাকা:

পুরান ঢাকায় পাটুয়াটুলি রোড (রোড এর দুই পাশ ইলেক্ট্রনিক্স মার্কেট) জগন্নাথ বিঃ এর এর পর সদরঘাট এর আগে যদি আপনি গুলিস্তান থেকে সদরঘাট এর দিকে যান ইলেক্ট্রনিক এর মার্কেট আছে, স্টেডিয়াম এর চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ।

🎯 চকবাজারঃ

পাইকারি কাপড়ের বাজার চকবাজার: পুরোন ঢাকার লালবাগে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় বাজার। রমজান মাসে রকমারি এখানে রকমারি ইফতারের পশরা বসে। কাবাবের কথা আসলেই চকবাজারের নামটিও আসবে। চকবাজারের কাবাব খুব বিখ্যাত। ঢাকার পুরানো বাজারগুলির মধ্যে চক অন্যতম।

🎯 শ্যামবাজার :

ঢাকার অন্যতম পুরাতন বাজার। এটা ব্রিটিশ শাসনামল থেকে ঢাকাবাসীর বিভিন্ন দ্রব্যের যোগান দিয়ে আসছে। বর্তমানে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্ববধানে বাজারটি পরিচালিত হচ্ছে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে পূর্ব দিকে ৮ – ১৫ গজ দূরে শ্যমবাজারের সীমানা শুরু।

এই বাজারে সাধারণত ফজর নামাযের পর থেকে সকাল ১১.০০ টা পর্যন্ত বেশী ভিড় হয়। কোন সাপ্তাহিক বন্ধ নেই এবং প্রতিদিন ভোর বেলা থেকে রাত ৮.০০ টা পর্যন্ত স্বাভাবিক লেনদেন হয়ে থাকে। সাধারণত প্রায় দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার সব কাঁচা বাজার ও ফলমূল পাওয়া যায়। যেমন – আলু, পেঁয়াজ, মরিচ, বেগুন, মাছ, সবজি, পটল, করলা ইত্যাদি। আর ফলমূল এর মধ্যে রয়েছে – আম, জাম, কলা, লিচু, তেঁতুল, আনারস, পেয়ারা ইত্যাদি। এছাড়া তেল, লবণ, মসলাও পাওয়া যায়।

বাজারের বিভিন্ন ধরনের ভাগ আছে। যেমন – ১নং রোডে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড় ঘেঁষে রয়েছে আম, কাঁঠাল, লিচু এবং অন্যান্য ফল আর নদীর পাড়ের রাস্তার বিপরীত পাশে পাওয়া যায় আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ইত্যাদি। মূল বাজারের মাঝামাঝি ও নদীর পাড় ঘেঁষে বিভিন্ন রকম শাক-সবজির বাজার বসে।

🎯 বাংলাবাজার:

বর্তমানে বাংলাবাজার বাংলাদেশের মধ্যে বইয়ের বৃহত্তম মার্কেট। বাংলাদেশের প্রকাশনা ব্যবসা আবতির্ত হচ্ছে বাংলাবাজারকে ঘিরে। পাঠ্যবইসহ অন্যান্য অনেক ধরনের বই পাওয়া যাচ্ছে যেখান থেকে। বাংলাদেশের বড় বড় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর অফিসও বাংলাবাজারেই অবস্থিত। এছাড়াও পোশাক সামগ্রীর জন্যও এটি বিখ্যাত।

🎯 মতিঝিল:

ঢাকা শহরের প্রধান বানিজ্যিক এলাকা। এটি ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এখানে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক জনতা ব্যাংক সহ বহু প্রতিষ্ঠানের মূল কার্যালয় । আরামবাগ: বিভিন্ন ক্রীড়া সংঘ, কম্পিউটার্স, কম্পোজ, ডিজাইন, প্রিন্টিং প্রেস ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত।

🎯 এলিফ্যান্ট রোড:

জুতা, ব্যাগ, সিরামিকস/চীনামাটির বাসনপত্র, কাপড়, পর্দা, দর্জা জানালার পর্দা, বেডিং সামগ্রী নতুন পূরাতন কম্পিউটার, ক্রয় বিক্রয় ও মেরামত।

🎯 মাল্টিপ্লান:

এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত কম্পিউটার, ইলেক্ট্রনিক্স, ক্যামেরা সামগ্রীর বৃহৎ মার্কেট। ইষ্টার্ণ মল্লিকা, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা কাঁটাবন: ইসলামি বইপত্র, সিডি, বোরখা, হিজাব, সুগগ্ধি, অ্যাকুরিয়াম পাখি, কোম্পানি নেমপ্লেট,সাইনবোর্ড ব্যানার প্রিন্ট ব্রান্ডিং সামগ্রী

🎯 নিউমার্কেট:

১৯৫২-৫৪ সালে নির্মিত একটি বিপণি কেন্দ্র। পর্যায়ক্রমে এটি ঢাকার বাইরের ক্রেতাদেরও আকর্ষণ করে। মার্কেটটি আজিমপুরে অবস্থিত, যার পূর্বদিকে রয়েছে মিরপুর রোড, উত্তরে ঢাকা কলেজ, পশ্চিম পার্শ্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং দক্ষিণে পিলখানা রোড।

মার্কেটটির পাশেই খুচরা দোকানের একটি কেন্দ্র আছে। সেখানে কাপড়-চোপড়, ঔষধ, টয়লেট সামগ্রী ও গৃহস্থালি ব্যবহারের টুকি-টাকি দ্রব্যাদি বিক্রয় হয়। এছাড়া, বেশ কয়েকটি দোকানে বিক্রয় হয় প্রসাধনী সামগ্রী, স্যুভেনির ও শোপিস সামগ্রী, তৈজসপত্র, হালকা বৈদ্যুতিক দ্রব্য ও আসবাবপত্র। মার্কেটটির উত্তর দিকে মুদির দোকান এবং মাছ, মাংস, ফল-মূল ও সবজির বাজার রয়েছে।

আজকের দিনে ‘নিউমার্কেট’ বলতে ভিতরে এবং বাইরে বৈচিত্র্যপূর্ণ দোকানের এক বিপুল সমাহারকে বোঝায়। মূল মার্কেটে তিনটি উঁচু খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার রয়েছে, ভিতরে আছে বই-পত্র ও লেখা-লেখির সামগ্রী, ঘড়ি, চশমা, চামড়ার সামগ্রী ও ভ্রমণের উপকরণাদি, মুদি দ্রব্যাদি, কাপড়-চোপড়, অলঙ্কার ও বৈদ্যুতিক দ্রব্যাদি এবং দরজি, ফাস্টফুড ও ছবি তোলা ও প্রসেসিং-এর দোকান। দোকানগুলির সামনে একটা আচ্ছাদিত টানা বারান্দা রয়েছে।

মার্কেটটিতে মোট ৪৬৮টি দোকান রয়েছে এবং বাজার করতে আসা ক্রেতারা এখানে তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রায় সব জিনিস-পত্রই পেয়ে থাকে।

নিউমার্কেটের বিপরীতে, পোশাক সামগ্রীর জন্য বিখ্যাত চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট: নিউমার্কেটের উত্তরে অবস্থিত পোশাক সামগ্রীর জন্য বিখ্যাত।

🎯 নীলক্ষেত:

ঢাকা শহরের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের নিকট নীলক্ষেত অত্যন্ত পরিচিত এবং অতি প্রয়োজনীয় মার্কেট। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছেও এ মার্কেট গুরুত্ব বহন করে। কেননা, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন লেখকদের বই তথা প্রয়োজনীয় সকল বই-পত্রের জন্য নীলক্ষেত বই মার্কেটের বিকল্প নেই ঢাকা শহরতো বটেই, সারা দেশেও। বইয়ের মার্কেটের ক্ষেত্রে নীলক্ষেত বই মার্কেট তাই একচ্ছত্র আধিপত্য ভোগ করছে।

এখানে বইয়ের পাশাপাশি ফটোকপির দোকান, বাইন্ডিং অর্থাৎ বাঁধাইয়ের দোকান, কম্পিউটারে বিবিধ কাজ করার দোকান, ছাপাখানা, সাইবার ক্যাফে, অটো ক্যাড প্রিন্টিংয়ের দোকান, টেইলার্সের দোকান ও খাবার দোকান অবস্থিত। ৫ টি মার্কেটের সমন্বয় হচ্ছে নীলক্ষেত বই মার্কেট এখানে নতুন ও পুরাতন বোর্ড বই, রেফারেন্স বুক, ম্যাগাজিন প্রভৃতি সকল ধরনের বই পাওয়া যায়।

🎯 ইসলামিয়া বহুমুখী সমবায় সমিতি:

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন, ইংরেজী মাধ্যম স্কুল, বিসিএস এবং অন্যান্য প্রতিযোগতামূলক পরীক্ষার নতুন ও পুরাতন বই পাওয়া যায়।

🎯 বিসিএস কম্পিউটার সিটি:

বেগম রোকেয়া স্বরণী, আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা – ১২০৭। ২০০০ ইং সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শপিং মলটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন, নিজস্ব স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর সুবিধাসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং টাইলস সজ্জিত নতুন ভবনে অবস্থিত। মার্কেটটিতে মোট দোকানের সংখ্যা ৩৫০ টি। মার্কেট মালিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শপিং মলটি পরিচালিত হয়। এটি দেশের বৃহত্তম কম্পিউটার মার্কেট।

🎯 মোতালেব প্লাজা হাতির পুল:

মোবাইল ফোন সামগ্রী বিক্রয় মেরামত ও পাইকারি বিক্রয় শপিং মলটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন, এস্কেলেটর সুবিধা, নিজস্ব স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর সুবিধাসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রীত এবং টাইলস সজ্জিত নতুন ভবনে অবস্থিত। এখানে মোট দোকান সংখ্যা ১২০০ টি। মালিক সমিতি কর্তৃক শপিং মলটি পরিচালিত হয়। হাতিরপুল বাজার: সিরামিক টাইলস, বাথরুম ফিটিংস সামগ্রী, কাঁচাবাজার,ইত্যাদি। আজিজ সুপার মার্কেট,শাহবাগ: পোশাক সামগ্রী,কারুপন্য, হস্তশিল্প

🎯 গাউসুল আজম মার্কেট:

নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সাথে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ২০০ এর অধিক দোকান। এখানে যে সব সুবিধা পাওয়া যায়- ফটোকপি, সাইবার ক্যাফে, মুদ্রন ও প্রিন্টিং, টেইলার্স, ছবি বাঁধাইয়ের দোকান, কম্পিউটারের বিভিন্ন কাজ।

রাস্তার সামনের অংশটিকে সিটি কর্পোরেশন মার্কেট বলা হয়। এখানে রয়েছে খাবার দোকান,ফটোকপির দোকান A3, A4 অটো ক্যাড প্রিন্টিং এর দোকান।

🎯 ইস্টার্ন প্লাজা:

১ম তলা – প্রসাধনী, ইলেকট্রনিক, থালা বাসন ইত্যাদির দোকান। ২য় তলা – শাড়ী, সেলয়ার কামিজ, টি-র্শাট, টেইলার্স ইত্যাদির দোকান ৩য় তলা – গয়না, সোনা, রূপা, ছোট বাচ্চাদের খেলনার দোকান। ৪র্থ তলা – জুতার দোকান, বিভিন্ন ব্রান্ডের জুতার দোকান। ৫ম তলা – মোবাইলের দোকান, এবং মোবাইল সার্ভিসিং করার দোকান। ৬ষ্ট তলা – মার্কেট মালিক সমিতি অফিস। ৭ম তলা – ডাক্তার চেম্বার। ৮ম তলা – ডাক্তার চেম্বার, অফিস। ৯ম তলা – ঘটক পাখি ভাই।

🎯 কারওয়ান বাজার:

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ও ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় কেন্দ্রীয় পাইকারী ও খুচরা বাজার। ঢাকা শহরের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে এখানে অনেক বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। দৈনিক প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ), দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট এবং আরও অনেক খবরের কাগজের প্রধান অফিস কাওরান বাজারে অবস্থিত। এছাড়াও একুশে টেলিভিশন, এনটিভি, এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ বাংলাভিশন আরটিভি টেলিভিশনের প্রধান কার্যালয় এবং স্টুডিও কাওরান বাজারে অবস্থিত।

🎯 বেনারশী পল্লী: বেনারশী পল্লী একসময় শুধুমাত্র বেনারশী শাড়ির জন্যই বিখ্যাত ছিল। গত বছর কয়েক ধরে মিরপুর বেনারশী পল্লিতে বেনারশী শাড়ি ছাড়াও অন্যান্য সব ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। বেনারশী শাড়ি-Old + New, টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ি (কটন)। টাঙ্গাঈল হাফ সিল্ক। রাজশাহী সিল্ক। ধুপিয়ান। ঢাকাই মসলিন। কাতান। কোটা শাড়ি। ব্রোকেট শাড়ি। জামদানী শাড়ি। জর্জেট শাড়ি ইত্যাদি। এ ছাড়াও আরো নতুন নতুন কালেকশন পল্লীতে তৈরী হচ্ছে।

🎯 গুলিস্তান:

সবধরণের কাপড়, জুতা, খেলনা, ক্রোকারিজ, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীসহ সব ধরণের জিনিসপত্র পাওয়া যায়যমুনা ফিউচার পার্ক: বিশ্বের তৃতীয় এবং এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল হিসেবে পরিচিত “যমুনা ফিউচার পার্ক”। রাজধানীর কুড়িলে অবস্থিত এই শপিংকমপ্লেক্সটিতে সকল ধরনের কেনাকাটা ও বিনোদন সুবিধা রয়েছে। প্রগতি সরণি থেকে ফিউচার পার্ক প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে প্রথমেই পড়ে আউটডোর রাইডস। সারা পৃথিবীতে তোলপাড় করা ছয়টি রোমাঞ্চকর রাইড রয়েছে এখানে।

বর্ণিল আলোকছটায় উদ্ভাসিত ফিউচার পার্কের এই আউটডোর রাইডসের রোলার কোস্টার, স্কাইড্রপ, ম্যাজিক উইন্ডমিল, পাইরেট শিপ, ফ্লাইং ডিসকো ও টাওয়ার চ্যালেঞ্জার রীতিমতো শিহরণ জাগানিয়া। প্রথম তলার পুরোটাই গাড়ি পার্কিং এর জন্য নির্ধারিত। অন্যান্য ফ্লোরগুলো পণ্যের ক্যাটাগরী ভিত্তিক বিন্যাস করা হয়েছে। প্রতিটি ফ্লোরকে “দক্ষিণ-পশ্চিম”, “উত্তর-পশ্চিম”, “দক্ষিণ-পূর্ব” ও “উত্তর-পূর্ব” অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরীর পণ্য ও সেবা পাওয়া যাবে। এই শপিংমলের ষষ্ঠ তলার সম্পূর্ণটাই বিনোদন জোন হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ষষ্ঠ তলায় রয়েছে ফুডকোর্ট, রেষ্টুরেন্ট, প্লেয়ারস জোন, ব্লকবাস্টার সিনেমাস প্রভৃতি।

🎯 হযরত শাহজালাল মার্কেট:

এখানে মেডিক্যাল, ও লেভেল, এ-লেভেল, বিবিএ, এমবিএ, জিম্যাট (GMAT), স্যাট, (SAT), টোফেল (TOEFL), জিআরই (GRE), আইইলটিস (IELTS) এর প্রয়োজনীয় বই পাওয়া যায়।

আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ সবাইকে ।


ঢাকা: পাতাল মার্কেটে মোবাইল প্রযুক্তির আকাশসম সম্ভাবনা

বঙ্গবন্ধু স্কয়ার পাতাল সড়ক মার্কেট। সিঁড়ি বেয়ে নামতেই গিজ গিজ করছে মানুষ।

দুই দিকের গলিতে মোবাইল-ইলেকট্রনিক্সের দোকানের মুখে দু’টি করে ডেস্ক। স্বচ্ছ কাঁচের ভেতর তাঁতাল দিয়ে সুক্ষ্মভাবে মোবাইলে আঁচড় কাটছেন কারিগররা। কেউ কম্পিউটার-সফটওয়্যারে মোবাইল সল্যুশনে ব্যস্ত।

 

পায়ের শব্দ কানে গেলেই মাথা উঁচু করে প্রশ্ন ছুঁড়ছেন- ‘কী সমস্যা, এদিক আসেন’।

 

এক বিকেলে গুলিস্তান মোড়ের ওই পাতাল সড়ক মার্কেটে কারিগরদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেলো- বেকারত্ব ঘুচিয়ে তাদের প্রযুক্তি-আত্মর্ভিরতার গল্প। সাধারণ মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে সব স্মার্টফোনের যেকোন সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন খুদে কারিগররা।

 

এদের একজনের নাম বাচ্চু, পুরো নাম বাচ্চু খান, সবাই ডাকেন ‘ওস্তাদ বাচ্চু’ নামে। বয়স তার পয়ত্রিশের কোঠায়। ‘আলমগীর টেলিকম’ নামের দোকানের সামনে তার ডেস্ক।

 

কাজের ফাঁকে কথোপকথনে জানালেন, এখন সবার হাতে হাতে মোবাইল, নতুন নতুন মডেল আসছে, তাই বলে কী হাতের প্রিয় মোবাইলটি ঠিক না করে কেউ ফেলে রাখবে?

 

আলাপচারিতার মধ্যেই গ্রাহকরা মোবাইলের ত্রুটি নিয়ে আসছেন তার কাছে, প্রাথমিকভাবে দেখে ঠিক করে দেবেন বলে দরাদরি করছেন। দরাদরি মিলে গেলে ত্রুটি সারছেন বাচ্চু।

 

কথা প্রসঙ্গে বাচ্চু জানান, প্রায় কুড়ি বছর ধরে ইলেকট্রনিক্সের কাজ করছেন। আর মোবাইল ফোন আসার পর থেকেই তিনি মোবাইলের কারিগর।

 

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেটে তার বড় ভাই টিভি ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী বেচতেন। সেই দোকানে বড় ভাইয়ের সাথে ছিলেন বাচ্চু। টেপ-রেকর্ডারের নাড়াচাড়া থেকে শিখে যান সেগুলো ঠিক করার কৌশল।

 

‘এরপর যখন মোবাইল এলো, ইচ্ছা হলো মোবাইলের কাজ শিখবো। নষ্ট মোবাইলগুলো নিয়ে কাজ করতাম। ধীরে ধীরে শিখে যাই। এখন সাধারণ মোবাইল থেকে শুরু করে যেকোনো স্মার্টফোনের হার্ডওয়্যারের ত্রুটি সারাতে পারি। ’

 

গল্পের সময় আরেক কারিগর একটি স্মার্টফোন নিয়ে এলেন বাচ্চু খানের কাছে; ‘ওস্তাদ দ্যাখেন এইটা, কী সমস্যা’।

 

হাতে নিয়ে সুক্ষ্মভাবে দেখলেন, কোথায় সমস্যা থাকতে পারে তা জানালেন, পরামর্শ দিলেন সেভাবে ঠিক করতে।

 

অন্য এক কারিগর জানালেন, অন্তত একশ’র বেশি ছাত্র রয়েছে তার, সবাই দেখে দেখে শিখেছে। পাতাল মার্কেট ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এবং ঢাকার বাইরেও রয়েছেন তারা।

 

খুলনার বন্দর থানা এলাকার বাচ্চু মিয়া জানালেন, দিনে গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা আয় হয়। ডেস্কের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা বাদ দিয়ে মাসে জমা হয় আরও ১৫/২০ হাজার। স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন বাচ্চু।

 

তার আরও দুই ভাই মোবাইল টেকিনিশিয়ানের কাজ করছেন এই মার্কেটেই।

 

পাতাল সড়ক মার্কেটে রয়েছে মোবাইল-ইলেকট্রনিক্সে ১০৪টি দোকান। দোকানগুলোতে মোবাইল-ট্যাবের কাভার, টাচ স্ক্রিন, কী-প্যাড, হেড ফোন, ব্লুটুথ ডিভাইস, চার্জারসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদি খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর সেগুলোর প্রতিটির সামনে দু’টি করে ডেস্কে বসেছেন মোবাইল কারিগররা।

 

ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলছেন, মানুষের হাতে নতুন নতুন হ্যান্ডসেট আসছে, দিন দিন সেট ব্যবহারকারীর সাথে সাথে ত্রুটিও দেখা দিচ্ছে। আর তা সারাতে কারিগরদের কদরও বাড়ছে।

 

তিন শতাধিক কারিগর পাতাল মার্কেটে মোবাইলে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের কাজ করছেন বলে জানান বাচ্চু খান।

 

মোবাইল প্রযুক্তির উপর তাদের একাডেমিক কোন শিক্ষ নেই, দেখে দেখে শিখেছেন তারা।

 

১০ হাজার টাকায় তিন মাসের মধ্যে যে কেউ তার কাছে হার্ডওয়ারের কাজ শিখতে পারবে বলে জানান বাচ্চু।

 

তিনি বলেন, মোবাইল ব্যবহার বাড়ছে, আগামীতে কারিগরদের আয়ের পরিসরও বাড়বে। প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারলে ভাল। এতে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

 

পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পেলে তারা মোবাইলের উপর উচ্চ প্রযুক্তি শিখে ভাল আয় করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বাচ্চু খান।

=================================

মোবাইল ফোনের উপকরণ

কোথায় কেমন দাম, জেনে নিন।

গান শোনা, কথা বলা: নিরিবিলি কিংবা জনস্রোতে, আজকাল তরুন-তরুনীদের কানে শোভা পায় নানান রকমের ইয়ারফোন।

ম্যাল্টিপ্লান প্লাজার ‘লাল সবুজ’ ইলেক্ট্রনিক্স’য়ের স্বত্বাধিকারী আবু বকর সিদ্দিকি বলেন “বর্তমান বাজারে বিটস, মাইক্রোল্যাব, লজিটেক, সনি, ক্রিয়েটিভ, বেলকিনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ইয়ারফোন পাওয়া যাচ্ছে।”

তিনি জানান, বাংলাদেশে মূলত বেশিরভাগ ব্র্যান্ডেরই ‘এ প্লাস’ রেপ্লিকা পাওয়া যায়।” এক্ষেত্রে ‘বিটস’ ব্র্যান্ডের ইয়ারফোনের দাম পড়বে ৪শ’ থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা। মাইক্রোল্যাব’য়ের ইয়ারফোন পাওয়া যাবে সাড়ে ৪শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকায়।

একটু কম দামের মধ্যে নিতে চাইলে দেখতে পারেন ‘এওয়াই’য়ের ইয়ারফোনগুলো। সেক্ষেত্রে বাজেট ৫শ’ থেকে ৭শ’ হলেই চলবে। ‘বেলকিন’ ব্র্যান্ডের ইয়ারফোন পাওয়া যাবে ৭শ’ থেকে ১ হাজার টাকায়। এছাড়াও ‘সনি’র ইয়ারফোন ৪শ’ থেকে ৮শ’, ‘স্কালক্যান্ডি’ ইয়ারফোন সাড়ে ৩শ’ থেকে ৬শ এবং ‘লজিটেক’য়ের ইয়ারফোন পাওয়া যাবে সাড়ে ৪শ’ থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকায়।


লজিটেক’য়ের ইয়ারফোনের ওপর রয়েছে এক বছরের ওয়ারেন্টি। 

কভার

মোবাইল ফোন সুন্দর ও সুরক্ষিত করতে অনেকেই নানান রংয়ের কভার ব্যবহার করেন। বিভিন্ন রকমের ব্যাক কাভার বা ফ্লিপ কাভারগুলোর দাম ২শ’ থেকে ৮শ’ টাকা।

বাজারে পাওয়া যায় এমন কাভারগুলোর মধ্যে নীলকিন, স্পাইজেন, এফআইবি এবং হ্যালোকিটি ব্র্যান্ডের প্রাধান্য বেশি। এদের মধ্যে ‘নীলকিন’ এবং ‘স্পাইজেন’য়ের কাভারগুলোর দাম ৩শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। রাজধানীর হাতিরপুলের মোতালিব প্লাজায় এরকম দাম হলেও মার্কেট ভেদে এসব কভারের দামে পার্থক্য রয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের কার্টুনছবি সম্বলিত ‘হ্যালোকিটি’র কাভার দিয়ে মোবাইল ফোন সাজাতে পারেন ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়।

যারা ‘আইফোন’ ব্যবহার করেন তারা ঘুরে আসতে পারেন বসুন্ধরা সিটির ‘অ্যাপল গ্যালারী’ থেকে। ৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে আইফোনের ব্যাক কাভার, ফ্লিপ কাভারসহ সব আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র পাওয়া যাবে এখানে।


স্ক্রিন প্রটেক্টর: মোবাইল ফোনের সুরক্ষার জন্য স্ক্রিন প্রটেক্টর কিংবা গ্লাস প্রটেক্টর খুবই জরুরি। ধুলোবালির হাত থেকে রক্ষা পেতে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকার মধ্যে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে লাগিয়ে নেওয়া যায় নতুন পর্দা। তবে গ্লাস প্রটেক্টরের জন্য গুনতে হবে ৬শ’ থেকে ১ হাজার টাকা।

ব্যাটারি: বর্তমানে দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স দোকান কিংবা শোরুমগুলোতে প্রায় সব ধরনের মোবাইল ফোনের ব্যাটারি পাওয়া যায়। নোকিয়া, স্যামস্যাং, সনি, সিমফোনিসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের সাধারণ ফোনগুলোর ব্যাটারি পাওয়া যাবে ৩শ থেকে ৭শ’ টাকার মধ্যে।

তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোর জন্য নতুন ব্যাটারি কিনতে হলে ক্ষেত্র বিশেষে খরচ করতে হবে ১ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।

চার্জার

যারা একাধিক মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তাদের জন্য রয়েছে ইউনিভার্সাল চার্জার। এসব চার্জার দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন চার্জ দেওয়া যাবে। এ ধরনের চার্জারের মধ্যে বর্তমানে ‘এলডিনিও’র চাহিদা বেশি। দাম ৪শ’ থেকে ৭শ’ টাকা।

মেমোরি কার্ড: মোবাইল ফোনে তথ্য, গান কিংবা ছবি সংরক্ষণ করতে অনেকেই মেমোরি কার্ড ব্যবহার করেন। বর্তমান বাজারে ট্রান্সসেন্ড, স্যানডিস্ক, তোসিবা, অ্যাপাচার, টুইনমসসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেমোরি কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে ‘ট্রান্সসেন্ড’ এবং ‘স্যান্ডডিস্ক’য়ের চাহিদা তুলনামূলক বেশি।

ম্যামরি কার্ডের ধারণক্ষমতা ভেদে দাম পড়বে আড়াইশ থেকে ২ হাজার টাকা। তবে ‘ক্লাস টেন’ মানের মেমোরি কার্ডের দাম আরও বেশি হতে পারে।

বাহুবন্ধনী, কভার এবং ক্লিনার: রাজধানীর মোতালেব প্লাজার ‘সারা টেলিকম’য়ে পাওয়া যাচ্ছে মোবাইল ফোন রাখার জন্য বিশেষ বাহুবন্ধনী। যারা নিয়মিত স্লাইকিং করেন তাদের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে এই বিশেষ বাহুবন্ধনী।

এ সম্পর্কে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ অধ্যয়নরত ক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন “সাইকেল চালনোর সময় এই বাহুবন্ধনী নিয়মিত ব্যবহার করে থাকি। ফলে যখনই ফোন আসুক না কেন তা টের পাওয়া যায় এবং ইচ্ছে হলে নিরাপদ স্থানে গিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যায়।”

এই বিশেষ বাহুবন্ধনীর পাওয়া যাবে ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা।


মোবাইল ফোন নিয়ে চলাফেরা সহজ করতে বাজারে রয়েছে ওয়াটার প্রুফ চামড়ার ব্যাগ। সাড়ে ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে এধরনের ব্যাগগুলো।

এছাড়াও মোবাইলে ফোনের স্ক্রিন পরিষ্কার রাখতে ব্যবহার করা যেতে পারে ‘ওপুলা’ ব্র্যান্ডের ক্লিনার। দাম পড়বে ২শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা।

স্টিকার: অনেকেই মোবাইল ফোনে বিভিন্ন রকমের স্টিকার ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। এ ধরনের স্টিকারগুলোর মান এবং আকারভেদে দাম ৫০ থেকে ২শ’ টাকা।

কোথায় পাবেন

আপনার মোবাইল ফোন সুরক্ষিত ও দৃষ্টিনন্দন করতে কিনে নিতে পারেন নতুন কোনো উপকরণ। রাজধানীর মোতালেব প্লাজা, ইস্টার্ন মল্লিকা, মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার, আইডিবি ভবন এবং বসুন্ধরা সিটিসহ দেশের ছোট-বড় ইলেকট্রনিক্স দোকানগুলোতে পাওয়া যাবে এসব আনুষাঙ্গিক পণ্য।

চট্টগ্রাম।

মোবাইল সেট পাইকারী বিক্রি করা হয়।নাহার ইলেকট্রনিক চৌধুরী মার্কেট রিয়াজ উদ্দীন বাজার চট্টগ্রাম।যোগাযোগ01818865559


Comments

Popular posts from this blog

বাংলা নাটক ও ছিনেমা

article submit of earn guest post

Answer&question-Forum problem solve